”এটা আর কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেই। ছাত্রদের আন্দোলনে নেই। রাজনৈতিক আন্দোলনে চলে গেছে,” বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি যদি ‘সেরকম’ হয়, প্রধানমন্ত্রী চাইলে তারা পদত্যাগ করবেন।
শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের পর ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিলের নতুন সূচি ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শিথিলের সময় আরও দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হয়। রোববার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যা চলবে তিনি জানান।
এসময় তার কাছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকার পরিস্থিতি তুলে ধরে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন আন্দোলনকারীরা সম্প্রতি আপনিসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা স্বাভাবিক রাখতে আপনারা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ‘স্যাক্রিফাইস’ করবেন কি না?
এর জবাবে কামাল বলেন, “প্রয়োজন হলে সেরকম পরিস্থিতি যদি আসে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন, আমরা সব সময় দেশের জন্য কাজ করি সেটা করব।”
শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ থেকে ’সরকার পতনের এক দফা’ ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ”এটা আর কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেই। ছাত্রদের আন্দোলনে নেই। রাজনৈতিক আন্দোলনে চলে গেছে।
”ছাত্রদের মিস লিড করে মিস গাইড করে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন অন্যদিকে নেওয়ার জন্য যারা প্রচেষ্টা নিছে তারাই এ কাজ করেছে।”
শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণ হওয়ার কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কোনো দাবি অবশিষ্ট নেই। রংপুরে পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকায় সরকারকে ’অসহযোগ’ এর কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের প্রস্তুতি এবং তা নস্যাৎ করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা নস্যাৎ করতে চাই না তো। দেশের জনগণ আন্দোলনে যুক্ত হয় হবে। সেগুলো আমরা নস্যাৎ করতে চাই না।”
তারা কোনো আক্রমণের শিকার হবে না কি না-আরেক প্রশ্নে কামাল বলেন, “আপনাকে যদি কেউ আক্রমণ করে তাহলে আপনি বসে থাকবেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেলফ ডিফেন্সের অধিকার দেওয়া আছে। আপনারও সেলফ ডিফেন্সের অধিকার আছে।”
রোববার আওয়ামী লীগের কর্মসূচির বিষয়ে আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ”শোকের মাস চলছে। বঙ্গবন্ধু শাহাদাতের পাশাপাশি ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হত্যার শোকও এ মাসে পালন করে থাকি। এ দিনের জন্য স্পেশাল কিছু করা হচ্ছে না।”
আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় মধ্যে ইউনিসেফের ‘৩২ শিশু নিহত’ হওয়ার তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শিশুর সংজ্ঞা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করছেন না। শিশুর একটা সংজ্ঞা আছে। ১৮ বছরকে শিশু বলে না, তাদের কিশোর বলে।
”কোনো শিশু মারা যায়নি। শিশু বলতে আমরা যা বুঝি, সেই শিশু মারা যায়নি। হয়ত দুই-একজন কিশোর মারা গেছে। আন্দোলনের সময় তাদের ঢাল হিসেবে নিয়ে এসেছিল। তাদের যে চেহারা, তা শিশুদের আড়ালেই তারা ছিল। পেছনের শক্তিটাই কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।”