ঢাকা ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদযাত্রার যাত্রীদের ঘাড়ে খালি বাস ফেরার ‘বোঝা’

মাদরাসা শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বাড়ি নেত্রকোণা। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছেন বাড়িফেরার বাসে চড়তে। কিন্তু নেত্রকোণাগামী শাহজালাল এক্সপ্রেসের টিকিট কাটতে গিয়ে শোনেন প্রতি টিকিটের দাম নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা, যা সাধারণ সময়ে ৪০০ টাকা।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সবসময় নেত্রকোণা যাওয়া-আসা করেছি ৪০০ টাকা দিয়ে, কিন্তু আজ টিকিট কাটতে এসে দেখি ভাড়া রাখা হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমি শিক্ষার্থী, এতো টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাওয়া আমার জন্য অনেক কষ্টকর।

অভিযোগ উঠেছে কালোবাজারিরও। তিনি বলেন, আমি প্রথমে কাউন্টারে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা বন্ধ দেখা যায়। পরে বাসের সামনে যেতেই একজন ডাক দিয়ে বললো কই যাবো, উত্তর জানতেই বললো উঠে পড়েন, ভাড়া ৮০০ টাকা পড়বে। তবে তারা কোনো টিকিট দিচ্ছে না।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সরেজমিন মহাখালী বাস টার্মিনালে ঘুরে বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ মিলেছে। সৌখিন পরিবহনের বাসে চড়ে ময়মনসিংহ যাবেন ইখলাস উদ্দিন। তিনিও জানালেন নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে ২০০ টাকা অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে।

ইখলাস বলেন, আমরা সবসময় ৩০০ টাকার মধ্যেই ময়মনসিংহ যাই। আজ ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে। পরিবহনের লোকজন বলছে, গেলে চলেন, না গেলে নাই।এখন কিছু তো করার নাই, যেতে হবেই।

এ বিষয়ে বাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা ছেড়ে যেসব বাস গন্তব্যে যায়, ফেরার সময় সেগুলো প্রায় খালি ফেরে। তাই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহগামী একটি পরিবহনের এক কর্মী বলেন, অন্যান্য সময়ে সরকারি যে ভাড়ার চার্ট, তার চাইতে ভাড়া কম নেওয়া হতো। এখন নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা মনে করছেন ভাড়া বেশি নিচ্ছি। তাছাড়া ফেরার সময় বাসগুলো ঢাকায় খালি ফেরে, তাই একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে আরকি।

আরো কয়েকটি পরিবহনের কর্মীরাও স্বীকার করেছেন, ঈদ উপলক্ষ্যেই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে, বছরে এই একবারই বেশি ভাড়া নেওয়া হয়।

পরিবহনগুলোর এই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এই বাড়তি ভাড়া আদায়কে অবৈধ বলা যাবে না। কারণ অন্যান্য সময় পরিবহনগুলো সরকারি ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া নেয়। এখন নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছে, যেটাকে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া মনে করছেন। কিন্তু এটা অতিরিক্ত ভাড়া নয়, এই ভাড়াকে অবৈধ বলা যাবে না।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি টার্মিনালে বিআরটিএর ভিজিল্যান্স টিম কাজ করছে, ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার যথাযথ অভিযোগ কেউ নিয়ে এলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ঈদযাত্রার যাত্রীদের ঘাড়ে খালি বাস ফেরার ‘বোঝা’

আপডেট সময় : ১২:৪২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

মাদরাসা শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বাড়ি নেত্রকোণা। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছেন বাড়িফেরার বাসে চড়তে। কিন্তু নেত্রকোণাগামী শাহজালাল এক্সপ্রেসের টিকিট কাটতে গিয়ে শোনেন প্রতি টিকিটের দাম নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা, যা সাধারণ সময়ে ৪০০ টাকা।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সবসময় নেত্রকোণা যাওয়া-আসা করেছি ৪০০ টাকা দিয়ে, কিন্তু আজ টিকিট কাটতে এসে দেখি ভাড়া রাখা হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমি শিক্ষার্থী, এতো টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাওয়া আমার জন্য অনেক কষ্টকর।

অভিযোগ উঠেছে কালোবাজারিরও। তিনি বলেন, আমি প্রথমে কাউন্টারে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা বন্ধ দেখা যায়। পরে বাসের সামনে যেতেই একজন ডাক দিয়ে বললো কই যাবো, উত্তর জানতেই বললো উঠে পড়েন, ভাড়া ৮০০ টাকা পড়বে। তবে তারা কোনো টিকিট দিচ্ছে না।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সরেজমিন মহাখালী বাস টার্মিনালে ঘুরে বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ মিলেছে। সৌখিন পরিবহনের বাসে চড়ে ময়মনসিংহ যাবেন ইখলাস উদ্দিন। তিনিও জানালেন নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে ২০০ টাকা অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে।

ইখলাস বলেন, আমরা সবসময় ৩০০ টাকার মধ্যেই ময়মনসিংহ যাই। আজ ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে। পরিবহনের লোকজন বলছে, গেলে চলেন, না গেলে নাই।এখন কিছু তো করার নাই, যেতে হবেই।

এ বিষয়ে বাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা ছেড়ে যেসব বাস গন্তব্যে যায়, ফেরার সময় সেগুলো প্রায় খালি ফেরে। তাই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহগামী একটি পরিবহনের এক কর্মী বলেন, অন্যান্য সময়ে সরকারি যে ভাড়ার চার্ট, তার চাইতে ভাড়া কম নেওয়া হতো। এখন নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা মনে করছেন ভাড়া বেশি নিচ্ছি। তাছাড়া ফেরার সময় বাসগুলো ঢাকায় খালি ফেরে, তাই একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে আরকি।

আরো কয়েকটি পরিবহনের কর্মীরাও স্বীকার করেছেন, ঈদ উপলক্ষ্যেই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে, বছরে এই একবারই বেশি ভাড়া নেওয়া হয়।

পরিবহনগুলোর এই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এই বাড়তি ভাড়া আদায়কে অবৈধ বলা যাবে না। কারণ অন্যান্য সময় পরিবহনগুলো সরকারি ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া নেয়। এখন নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছে, যেটাকে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া মনে করছেন। কিন্তু এটা অতিরিক্ত ভাড়া নয়, এই ভাড়াকে অবৈধ বলা যাবে না।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি টার্মিনালে বিআরটিএর ভিজিল্যান্স টিম কাজ করছে, ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার যথাযথ অভিযোগ কেউ নিয়ে এলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।