ঢাকা ০২:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমে উঠেছে গাউসিয়া মার্কেট-এ ঈদের বেচা-কেনা টার্গেট কয়েকশ কোটি টাকা

দরজায় কড়া নাড় পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকার গাউসিয়া মার্কেট। যেটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বিক্রির বাজার। করোনা মহমারির কারণে গত কয়েক বছর এখানকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়লেও এবার চিত্র আলাদা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বিশাল বাজার। সাড়ে ছয় হাজার দোকানের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার দোকানে পাইকারি দরে কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার ‘হাটবার’। এ দুদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাট বসে। হাটবারে বিক্রি প্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। হাটের দুদিন বাদেও পুরো সপ্তাহজুড়ে বেশ কিছু পাইকারি দোকান ও খুচরা দোকানগুলো খোলা থাকে।

সেই সঙ্গে এ মার্কেটে কাপড় কিনতে ভিড় করেন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, সিলেট, বরিশাল, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভৈরব, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। তিন তলাবিশিষ্ট গাউসিয়া মার্কেট-১ ও গাউসিয়া মার্কেট-২ এর প্রথম তলায় রয়েছে শাড়ি, কাপড়, থান কাপড়, বোরকা, লুঙ্গিসহ পাইকারি ও খুচরা দোকানের বিশাল সমাহার।

আর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে থ্রি-পিসসহ পাঞ্জাবির পাইকারি ও খুচরা দোকান। তৃতীয় তলায় রয়েছে ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল, টেইলার্স, জুয়েলারি, কসমেটিকস ইত্যাদি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছে ৯০ জন নিরাপত্তাকর্মী। একই সঙ্গে মার্কেটেই রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। তারাও সহযোগিতা করে থাকে।

 

ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি দোকানে বিক্রি ১ থেকে ৩ লাখ

জিন্নুরাইন ফ্যাশনের স্টাফ রিপন মোল্লা বলেন, এ মার্কেটে সব ধরনের কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে এসে মালামাল নিয়ে যায়। অন্য বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা বেশ ভালো। ক্রেতাদের আনাগোনা আছে। আশা করি সবারই এবার ভালো ঈদ কাটবে।

মার্কেটের ‘চেয়ারম্যান ফ্যাশন’-এর এস এম সামিউল্লাহ বলেন, আমাদের বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। করোনার পর এবারই অনেক ভালো। প্রতিদিনই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হচ্ছে। এবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি।

আরও বিক্রি বাড়বে শেষের ৮-১০ দিন

প্রায় ২০ বছর ধরে এ মার্কেটে ব্যবসা করছেন পুতুল ফ্যাশনের মালিক মো. কাজল। তিনি বলেন, শবে বরাতের পরে ভালো বেচাকেনা হয়েছিল। রোজা শুরুর পর থেকে বেচাকেনা একটু কম। তবে আশা করি শেষের ৮ থেকে ১০ দিন ভালো বেচাকেনা হবে। সে লক্ষ্যে আমাদেরও ভালো কালেকশন রয়েছে।

আরিফ অ্যান্ড শরিফ ফ্যাশনের স্টাফ সাগর বলেন, ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো। এখন মাসের শেষ এজন্য বেচাকেনা একটু কম। আশা করি সামনে আরও ভালো হবে। গত বছরের মতো এবারও ভালো বেচা-কেনা হবে।

বেচা-কেনা ছাড়াবে কয়েকশ কোটি

মার্কেটের বণিক সমিতির সভাপতি হাজী আবদুল মালেক  বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশ ভালোই বেচা-কেনা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন তাদের মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য। মার্কেটে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যার কারণে সবাই এখানে আসেন। আশা করা যায় এবারের ঈদে কয়েকশ কোটি টাকার বেচাকেনা ছাড়াবে।

গাউছিয়া মার্কেটের ম্যানেজার আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, এটা অনেক বড় মার্কেট। এখানে পাইকারি ও খুচরা দুটোই বিক্রি হয়। এজন্য এখানে দেশের প্রায় সব জেলা থেকেই লোকজন আসে মালামাল নেওয়ার জন্য। আর আমাদের এখানে সবচেয়ে বেশি ক্রেতা হচ্ছে নারীরা। কারণ মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার হাটবারে এত মানুষ হয়েছে, ইতিহাসে এরকম মানুষ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এবার বেচাকেনা ভালো। সামনে হয়তো আরও ভালো হবে। দূরের ব্যবসায়ীদের জন্য আড়তের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নিয়ে যায়। আমাদের এখানে সব রকমের মালামাল রয়েছে। গরিব মধ্যবিত্ত, সব শ্রেণির মানুষের জন্য এখানে মালামাল রয়েছে।

জমে উঠেছে গাউসিয়া মার্কেট-এ ঈদের বেচা-কেনা টার্গেট কয়েকশ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০৮:০৭:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

দরজায় কড়া নাড় পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকার গাউসিয়া মার্কেট। যেটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বিক্রির বাজার। করোনা মহমারির কারণে গত কয়েক বছর এখানকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়লেও এবার চিত্র আলাদা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বিশাল বাজার। সাড়ে ছয় হাজার দোকানের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার দোকানে পাইকারি দরে কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার ‘হাটবার’। এ দুদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাট বসে। হাটবারে বিক্রি প্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। হাটের দুদিন বাদেও পুরো সপ্তাহজুড়ে বেশ কিছু পাইকারি দোকান ও খুচরা দোকানগুলো খোলা থাকে।

সেই সঙ্গে এ মার্কেটে কাপড় কিনতে ভিড় করেন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, সিলেট, বরিশাল, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভৈরব, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। তিন তলাবিশিষ্ট গাউসিয়া মার্কেট-১ ও গাউসিয়া মার্কেট-২ এর প্রথম তলায় রয়েছে শাড়ি, কাপড়, থান কাপড়, বোরকা, লুঙ্গিসহ পাইকারি ও খুচরা দোকানের বিশাল সমাহার।

আর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে থ্রি-পিসসহ পাঞ্জাবির পাইকারি ও খুচরা দোকান। তৃতীয় তলায় রয়েছে ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল, টেইলার্স, জুয়েলারি, কসমেটিকস ইত্যাদি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছে ৯০ জন নিরাপত্তাকর্মী। একই সঙ্গে মার্কেটেই রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। তারাও সহযোগিতা করে থাকে।

 

ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি দোকানে বিক্রি ১ থেকে ৩ লাখ

জিন্নুরাইন ফ্যাশনের স্টাফ রিপন মোল্লা বলেন, এ মার্কেটে সব ধরনের কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে এসে মালামাল নিয়ে যায়। অন্য বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা বেশ ভালো। ক্রেতাদের আনাগোনা আছে। আশা করি সবারই এবার ভালো ঈদ কাটবে।

মার্কেটের ‘চেয়ারম্যান ফ্যাশন’-এর এস এম সামিউল্লাহ বলেন, আমাদের বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। করোনার পর এবারই অনেক ভালো। প্রতিদিনই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হচ্ছে। এবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি।

আরও বিক্রি বাড়বে শেষের ৮-১০ দিন

প্রায় ২০ বছর ধরে এ মার্কেটে ব্যবসা করছেন পুতুল ফ্যাশনের মালিক মো. কাজল। তিনি বলেন, শবে বরাতের পরে ভালো বেচাকেনা হয়েছিল। রোজা শুরুর পর থেকে বেচাকেনা একটু কম। তবে আশা করি শেষের ৮ থেকে ১০ দিন ভালো বেচাকেনা হবে। সে লক্ষ্যে আমাদেরও ভালো কালেকশন রয়েছে।

আরিফ অ্যান্ড শরিফ ফ্যাশনের স্টাফ সাগর বলেন, ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো। এখন মাসের শেষ এজন্য বেচাকেনা একটু কম। আশা করি সামনে আরও ভালো হবে। গত বছরের মতো এবারও ভালো বেচা-কেনা হবে।

বেচা-কেনা ছাড়াবে কয়েকশ কোটি

মার্কেটের বণিক সমিতির সভাপতি হাজী আবদুল মালেক  বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশ ভালোই বেচা-কেনা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন তাদের মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য। মার্কেটে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যার কারণে সবাই এখানে আসেন। আশা করা যায় এবারের ঈদে কয়েকশ কোটি টাকার বেচাকেনা ছাড়াবে।

গাউছিয়া মার্কেটের ম্যানেজার আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, এটা অনেক বড় মার্কেট। এখানে পাইকারি ও খুচরা দুটোই বিক্রি হয়। এজন্য এখানে দেশের প্রায় সব জেলা থেকেই লোকজন আসে মালামাল নেওয়ার জন্য। আর আমাদের এখানে সবচেয়ে বেশি ক্রেতা হচ্ছে নারীরা। কারণ মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার হাটবারে এত মানুষ হয়েছে, ইতিহাসে এরকম মানুষ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এবার বেচাকেনা ভালো। সামনে হয়তো আরও ভালো হবে। দূরের ব্যবসায়ীদের জন্য আড়তের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নিয়ে যায়। আমাদের এখানে সব রকমের মালামাল রয়েছে। গরিব মধ্যবিত্ত, সব শ্রেণির মানুষের জন্য এখানে মালামাল রয়েছে।