ঢাকা ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেলের পার্সেল পরিবহন প্রচারের অভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে না

এক সময় ট্রেনের পার্সেল ও পণ্য পরিবহনে ছিল নানান ভোগান্তি। পার্সেল পৌঁছাতে ছিল দীর্ঘসূত্রতা। সেসবের অবসান হয়েছে। এখন নেই আর দীর্ঘ অপেক্ষার ভোগান্তি।

প্রতিদিনের পার্সেল এখন প্রতিদিনের ট্রেনেই পাঠানো হয়। নিরাপদে এবং তুলনামূলক কম খরচে পার্সেল পরিবহন করছে রেলওয়ে। তবু আশানুরূপ সাড়া মিলছে না সেবাগ্রহীতাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রচারণা পেলে ট্রেনে পণ্য পরিবহন আরও জনপ্রিয় হবে।

সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে বিভিন্ন রুটে পার্সেল ও পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করেছে রেলওয়ে। এখন আন্তঃনগর ট্রেনের শেষের বগিতে পরিবহন করা হয় পার্সেল। পার্সেল সিহেবে ফ্রিজ, টেলিভিশন, আসবাবপত্রসহ সব ধরনের জিনিসপত্র পরিবহন করা যায়। এছাড়া পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ওয়াগন ট্রেন। এই ওয়াগন ট্রেনে পণ্য পরিবহনের বেশিরভাগই চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি তেলবাহী ট্যাঙ্ক৷

যেসব রুটে পার্সেল পরিবহন
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য বলছে, দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ট্রেনের মধ্যে পারাবত এক্সপ্রেস ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে যাতায়াত করে। ট্রেনটিতে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিং স্টেশন ঢাকা ও সিলেট। পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস যাতায়াত করে সিলেট-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে। ট্রেনটির পণ্য লোডিং এবং আনলোডিং হয় চট্টগ্রাম ও সিলেটে।

বিজয় এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে চলে। ট্রেনটি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব বাজার স্টেশনে থেমে লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে থাকে।

ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটে চলাচল করে। ট্রেনটি ঢাকা, মেলান্দহ বাজার, ইসলামপুর বাজার, দেওয়ানগঞ্জ বাজারে থেমে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে। জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা-ভূয়াপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এটি ঢাকা, তারাকান্দি, সরিষাবাড়ি, জামালপুর স্টেশনে লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এই ট্রেনটি ঢাকা, নরসিংদী, ভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জ স্টেশনে থেমে লোডিং এবং আনলোডিং করে। হাওর এক্সপ্রেস ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলে। এটি ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা এবং মোহনগঞ্জ স্টেশনে লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

মহানগর এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করে। এটি চট্টগ্রাম, লাকসাম, কুমিল্লা, ঢাকায় লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে।

চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যাতায়াত করা চট্টলা এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম, ফেনী, লাকসাম, ভৈরব বাজার, নরসিংদী এবং ঢাকা স্টেশনে লোডিং-আনলোডিং করে।

জয়ন্তীকা ও উপবন এক্সপ্রেস ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এটি ঢাকা, শায়েস্তাগঞ্জ এবং সিলেটে পণ্য লোডিং ও আনলোডিংয়ের কাজ করে। জয়ন্তীকা ও উপবন এক্সপ্রেসের আরেকটি ট্রেন সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচল করে। সেটি সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও ঢাকায় লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

লালমনি এক্সপ্রেস ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা রুটে চলাচল করে। ট্রেনটি ঢাকা, সান্তাহার, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে। এছাড়া ঢাকা-কুড়িগ্রাম-ঢাকা রুটে চলে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস। এটি ঢাকা, সান্তাহার, পার্বতীপুর, রংপুর এবং কুড়িগ্রাম স্টেশনে লোডিং ও আনলোডিং করে।

পণ্য পরিবহনের হিসাব
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের পার্সেল অ্যান্ড গুডস্ পরিবহন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্সেল বুকিং থেকে আয় হয়েছে ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৪০৭ টাকার। ফেব্রুয়ারিতে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৮ টাকা, মার্চে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৮১ টাকা, এপ্রিলে ৯ লাখ ১৭ হাজার ১২৪ টাকা, মে মাসে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩ টাকা, জুনে ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৪৫ টাকা, জুলাইয়ে ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪ টাকা, আগস্টে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৮ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৮ লাখ ৫২ হাজার ২৫৫ টাকা, অক্টোবরে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬২৭ টাকা, নভেম্বরে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৪ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮৭ টাকার।

আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ১৬ হাজার ৮০৪ টাকা এবং ফেব্রুয়ারি মাসে আয় হয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার ৫০৭ টাকা৷

দপ্তরের তথ্য আরও বলছে, পার্সেল ছাড়া পণ্য পরিবহনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ইনকামিং এবং আউটগোয়িং মিলিয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৬০ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ১১ লাখ ২১ হাজার ৬২ টাকা, মার্চ মাসে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা, এপ্রিলে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা, মে মাসে ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৬ টাকা, জুনে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩০০ টাকা, জুলাইয়ে ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৫ টাকা, আগস্টে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭৬০ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৬ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, অক্টোবরে ৪ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা, নভেম্বরে ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৮৬১ টাকা এবং ডিসেম্বরে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা আয় হয়েছে।

এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৫ টাকা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ টাকা আয় হয়েছে।

রেলওয়ের এ হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির তুলনায় একবছর পর আয় না বেড়ে উল্টো কমে গেছে। অথচ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত করা হয় লাগেজ ভ্যান। ১৬টি ট্রেন দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। সেদিন সকালে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুরে সিলেটগামী আন্তঃনগর জয়ন্তিকা ট্রেনে লাগেজ ভ্যান সংযোজন উদ্বোধন করেন। সেদিন মন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেনে এটি সংযোজন করা হবে। তবে সেবা বৃদ্ধির এ আয়োজনের পর রেলেওয়ের আয়ে কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ইনচার্জ (পার্সেল অ্যান্ড গুডস্) মো. শহীদুজ্জামান বলেন, ট্রেনে পার্সেল ও পণ্য পরিবহন আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। একটা সময় ধারণা ছিল ট্রেনে জিনিসপত্র পাঠালে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। এ ধারণা ভুল। আমরা প্রতিদিনের জিনিসপত্র প্রতিদিন বুকিং দিয়ে দেই। প্রতিদিনই ট্রেনে এসব জিনিসপত্র গন্তব্যে পৌঁছে যায়।

ট্রেনে পণ্য পরিবহন দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পণ্য পরিবহন দিনকে দিন বাড়ছে। এ খাত থেকে সরকারের আয়ও বেশি হচ্ছে। তবে অনেকেই জানে না ট্রেনে খুব সহজেই জিনিসপত্র পাঠানো যায়। প্রচারণা পেলে ট্রেনে পণ্য পরিবহন আরও জনপ্রিয় হবে।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার বলেন, ট্রেনে পণ্য পরিবহনে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে থাকি। কেউ জিনিসপত্র বুকিং দিতে আসলে খুব সহজেই তিনি যাতে যাবতীয় কাজ সারতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়।

রেলের পার্সেল পরিবহন প্রচারের অভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে না

আপডেট সময় : ১০:২০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

এক সময় ট্রেনের পার্সেল ও পণ্য পরিবহনে ছিল নানান ভোগান্তি। পার্সেল পৌঁছাতে ছিল দীর্ঘসূত্রতা। সেসবের অবসান হয়েছে। এখন নেই আর দীর্ঘ অপেক্ষার ভোগান্তি।

প্রতিদিনের পার্সেল এখন প্রতিদিনের ট্রেনেই পাঠানো হয়। নিরাপদে এবং তুলনামূলক কম খরচে পার্সেল পরিবহন করছে রেলওয়ে। তবু আশানুরূপ সাড়া মিলছে না সেবাগ্রহীতাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রচারণা পেলে ট্রেনে পণ্য পরিবহন আরও জনপ্রিয় হবে।

সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে বিভিন্ন রুটে পার্সেল ও পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করেছে রেলওয়ে। এখন আন্তঃনগর ট্রেনের শেষের বগিতে পরিবহন করা হয় পার্সেল। পার্সেল সিহেবে ফ্রিজ, টেলিভিশন, আসবাবপত্রসহ সব ধরনের জিনিসপত্র পরিবহন করা যায়। এছাড়া পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ওয়াগন ট্রেন। এই ওয়াগন ট্রেনে পণ্য পরিবহনের বেশিরভাগই চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি তেলবাহী ট্যাঙ্ক৷

যেসব রুটে পার্সেল পরিবহন
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য বলছে, দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ট্রেনের মধ্যে পারাবত এক্সপ্রেস ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে যাতায়াত করে। ট্রেনটিতে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিং স্টেশন ঢাকা ও সিলেট। পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস যাতায়াত করে সিলেট-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে। ট্রেনটির পণ্য লোডিং এবং আনলোডিং হয় চট্টগ্রাম ও সিলেটে।

বিজয় এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে চলে। ট্রেনটি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব বাজার স্টেশনে থেমে লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে থাকে।

ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটে চলাচল করে। ট্রেনটি ঢাকা, মেলান্দহ বাজার, ইসলামপুর বাজার, দেওয়ানগঞ্জ বাজারে থেমে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে। জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা-ভূয়াপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এটি ঢাকা, তারাকান্দি, সরিষাবাড়ি, জামালপুর স্টেশনে লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এই ট্রেনটি ঢাকা, নরসিংদী, ভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জ স্টেশনে থেমে লোডিং এবং আনলোডিং করে। হাওর এক্সপ্রেস ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলে। এটি ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা এবং মোহনগঞ্জ স্টেশনে লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

মহানগর এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করে। এটি চট্টগ্রাম, লাকসাম, কুমিল্লা, ঢাকায় লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে।

চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যাতায়াত করা চট্টলা এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম, ফেনী, লাকসাম, ভৈরব বাজার, নরসিংদী এবং ঢাকা স্টেশনে লোডিং-আনলোডিং করে।

জয়ন্তীকা ও উপবন এক্সপ্রেস ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এটি ঢাকা, শায়েস্তাগঞ্জ এবং সিলেটে পণ্য লোডিং ও আনলোডিংয়ের কাজ করে। জয়ন্তীকা ও উপবন এক্সপ্রেসের আরেকটি ট্রেন সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচল করে। সেটি সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও ঢাকায় লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করে।

লালমনি এক্সপ্রেস ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা রুটে চলাচল করে। ট্রেনটি ঢাকা, সান্তাহার, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরে পণ্য লোডিং এবং আনলোডিংয়ের কাজ করে। এছাড়া ঢাকা-কুড়িগ্রাম-ঢাকা রুটে চলে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস। এটি ঢাকা, সান্তাহার, পার্বতীপুর, রংপুর এবং কুড়িগ্রাম স্টেশনে লোডিং ও আনলোডিং করে।

পণ্য পরিবহনের হিসাব
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের পার্সেল অ্যান্ড গুডস্ পরিবহন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্সেল বুকিং থেকে আয় হয়েছে ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৪০৭ টাকার। ফেব্রুয়ারিতে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৮ টাকা, মার্চে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৮১ টাকা, এপ্রিলে ৯ লাখ ১৭ হাজার ১২৪ টাকা, মে মাসে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩ টাকা, জুনে ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৪৫ টাকা, জুলাইয়ে ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪ টাকা, আগস্টে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৮ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৮ লাখ ৫২ হাজার ২৫৫ টাকা, অক্টোবরে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬২৭ টাকা, নভেম্বরে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৪ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮৭ টাকার।

আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ১৬ হাজার ৮০৪ টাকা এবং ফেব্রুয়ারি মাসে আয় হয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার ৫০৭ টাকা৷

দপ্তরের তথ্য আরও বলছে, পার্সেল ছাড়া পণ্য পরিবহনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ইনকামিং এবং আউটগোয়িং মিলিয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৬০ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ১১ লাখ ২১ হাজার ৬২ টাকা, মার্চ মাসে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা, এপ্রিলে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা, মে মাসে ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৬ টাকা, জুনে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩০০ টাকা, জুলাইয়ে ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৫ টাকা, আগস্টে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭৬০ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৬ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, অক্টোবরে ৪ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা, নভেম্বরে ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৮৬১ টাকা এবং ডিসেম্বরে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা আয় হয়েছে।

এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৫ টাকা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ টাকা আয় হয়েছে।

রেলওয়ের এ হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির তুলনায় একবছর পর আয় না বেড়ে উল্টো কমে গেছে। অথচ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত করা হয় লাগেজ ভ্যান। ১৬টি ট্রেন দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। সেদিন সকালে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুরে সিলেটগামী আন্তঃনগর জয়ন্তিকা ট্রেনে লাগেজ ভ্যান সংযোজন উদ্বোধন করেন। সেদিন মন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেনে এটি সংযোজন করা হবে। তবে সেবা বৃদ্ধির এ আয়োজনের পর রেলেওয়ের আয়ে কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ইনচার্জ (পার্সেল অ্যান্ড গুডস্) মো. শহীদুজ্জামান বলেন, ট্রেনে পার্সেল ও পণ্য পরিবহন আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। একটা সময় ধারণা ছিল ট্রেনে জিনিসপত্র পাঠালে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। এ ধারণা ভুল। আমরা প্রতিদিনের জিনিসপত্র প্রতিদিন বুকিং দিয়ে দেই। প্রতিদিনই ট্রেনে এসব জিনিসপত্র গন্তব্যে পৌঁছে যায়।

ট্রেনে পণ্য পরিবহন দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পণ্য পরিবহন দিনকে দিন বাড়ছে। এ খাত থেকে সরকারের আয়ও বেশি হচ্ছে। তবে অনেকেই জানে না ট্রেনে খুব সহজেই জিনিসপত্র পাঠানো যায়। প্রচারণা পেলে ট্রেনে পণ্য পরিবহন আরও জনপ্রিয় হবে।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার বলেন, ট্রেনে পণ্য পরিবহনে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে থাকি। কেউ জিনিসপত্র বুকিং দিতে আসলে খুব সহজেই তিনি যাতে যাবতীয় কাজ সারতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়।